শরীয়তপুরে খেলনা প্লেনের প্রলোভন দেখিয়ে ৮ বছরের শিশুকে বলাৎকার

আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদক:

শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরসেনসাস ইউনিয়নের একটি গ্রামে খেলনা প্লেনের প্রলোভন দেখিয়ে ৮ বছরের এক শিশুকে নির্জন স্থানে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

১৩ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরসেনসাস ইউনিয়নের মাগন কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত স্বাধীন মোল্লা (২২) একই এলাকার বাবু মোল্লার ছেলে ।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার নিজ বাড়ীর উঠানে খেলাধূলা করছিলেন স্থানীয় একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিউল(ছদ্মনাম)। হঠাৎ সন্ধ্যায় শিশুটিকে না পেয়ে বাড়ীর আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে তার পরিবার । একপর্যায়ে বাড়ীর পাশে নির্জন একটি আম বাগানে শিশুটি সহ অভিযুক্ত স্বাধীন মোল্লাকে দেখতে পায় তার দাদি।

এসময় শিশুটি কান্নাকাটি করছিল। পরে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এসময় শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

বর্তমানে শিশুটি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিবার জানায় শিশুটিকে মাঝে মধ্যে খেলনা দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন বখাটে স্বাধীন মোল্লা।

একইভাবে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় একটি খেলনা প্লেন দেওয়ার কথা বলে তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে মুখ চেপে ধরে শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতন করে স্বাধীন। শিশুটির পরিবার দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, “আমার ছেলে সন্ধ্যার আগে বাসার সামনে খেলছিল। হঠাৎ দেখি ওকে খুঁজে পাচ্ছি না। পরে ওর দাদির সাথে কান্নাকাটি করতে করতে বাড়িতে ফিরে আসে। তখন ঘটনা জানতে পারি। ও বলেছে, স্বাধীন একটি খেলনা প্লেন দেবে বলে ওকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “আমার ছেলের সাথে যা হয়েছে, তা যেন আর কোনো মায়ের সন্তানকে না দেখতে হয়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।”

ভুক্তভোগী শিশুটির দাদি নুর জাহান বেগম বলেন, আমি অনেক সময় ধরে তাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এরপর হঠাৎ দেখি আমাদের পাশের বাগানে আমার নাতি ও স্বাধীন বসে আছে। আমি তার কাছে যাওয়ার সাথে সাথেই স্বাধীন দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং আমার নাতি রক্তাক্ত অবস্থায় বসে আছে। আমি তাকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে আমাকে সবকিছু খুলে বলে। এমন ন্যাক্কারজনক কাজ যে করেছে, সে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার হয়। আমরা চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক। “

অভিযুক্ত স্বাধীন মোল্লার বাড়ীতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনা জানাজানি হলে গতকাল রাতে ঘরে তালা মেরে পরিবার সহ স্বাধীন পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার চিকিৎসা চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।”