ডামুড্যায় কাজীর বিরুদ্ধে নির্ধারিত এলাকার বাইরে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ

আশিকুর রহমান হৃদয়:

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজী মো. কুদ্দুস ঢালীর বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশনা না মেনে উপজেলার অন্য এলাকায় গিয়ে বিয়ে পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত কাজী মো. কুদ্দুস ঢালী উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চর মালগাঁও গ্রামের হযরত আলী ঢালীর ছেলে ও নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক।

এ বিষয়ে ২৯ জানুয়ারি বুধবার শরীয়তপুর জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ধানকাঠি ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার মো: কেফায়েত উল্লাহ্ নামে এক কাজী।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কুদ্দুস কাজী উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত করেছেন তার এলাকা। তিনি ডামুড্যা পৌরসভার ১, ২ নং ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে রাতের আঁধারে গোপনে গিয়ে নিকাহ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন স্ব-স্ব এলাকায় দায়িত্বরত কাজীরা।

কাজীদের পক্ষ থেকে জেলা ও উপজেলা কাজী সমিতির নিকট অভিযোগ করা হলেও তদন্ত কমিটি ছাড়া নেওয়া হয় নি অন্য কোন ব্যবস্থা। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) রাতে উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের মালগাও গ্রামে গিয়ে নজরুল সরদারের মেয়ে সুমাইয়া বেগমের নিকাহ্ রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন।

এর আগে সিড্যা গিয়ে আয়েশা নামে ১৫ বছরের এক মেয়েকে বাল্যবিবাহ পড়িয়ে দেন তিনি। এছাড়াও সরকারি নির্ধারিত ফি-ছাড়াও অধিক টাকার লোভে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে বাল্যবিবাহ সহ অবৈধ নিকাহ রেজিস্টার করার অভিয়োগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ সব করে সরকারি ফি চাইতেও তিনগুন অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন কাজী কুদ্দুস। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি অন্য কাজী দের হুমকি ধামকি প্রধান করেন। এদিকে অভিযুক্ত মো. কুদ্দুস কাজীর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা রেজিস্ট্রার। তদন্ত থাকাকালীন সময়েও তিনি একই কাজে লিপ্ত হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বাদী কেফায়েত উল্লাহ্ বলেন, আমি ধানোকাঠী ইউনিয়নের কাজী হিসেবে নিকাহ্ রেজিস্ট্রি হিসেবে কাজ করছি। কুদ্দুস কাজী দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে অবৈধভাবে নিকাহ্ রেজিস্ট্রি করে আসসে। বিষয়টি নিয়ে তাকে একাধিকবার বলেছিলাম তবে তিনি শুনেনি। সে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার বলে আমাদের সবসময় হুমকি-ধামকি দিয়ে রাখতেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজী মো. কুদ্দুস ঢালী মুঠোফোনে বলেন, আমি ভুল করেছি এবং সেটা শিকারও করেছি। আমি এইধরনের কাজ আর করবো না সেটা তদন্ত কমিটির কাছে জানিয়েছি।

ডামুড্যা উপজেলা কাজী সমিতির সভাপতি আনিস মুন্সি বলেন, কুদ্দুস কাজীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। এর আগেও তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। তবে তিনি সরকারি আইন না মেনে বিভিন্ন ইউনিয়নে রাতের আঁধারে গোপনে গিয়ে নিকাহ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলার সকল কাজী। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।

এ বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতিরিক্ত দায়িত্ব মো: মাইনউদ্দিন বলেন, এক এলাকার কাজী অন্য এলাকায় বিবাহ পড়ানো অপরাধ। এছাড়াও তিনি যদি বাল্যবিয়ে সহ অতিরিক্ত টাকা নেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments

About T. M. Golam Mostafa

Check Also

শরীয়তপুরে বিকল্প ব্যবস্থা না করে সেতু নির্মাণ, নৌযান চলাচল বন্ধ

আজকের শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের নাড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার লঞ্চঘাট এলাকায় জয়ন্তী নদীতে লোহার খুঁটি দিয়ে আটকিয়ে …

কপি না করার জন্য ধন্যবাদ।