থানায় অভিযোগ দেওয়ায় বাদীর বসত-ঘরে আগুন দিলেন অভিযুক্তরা

আশিকুর রহমান হৃদয়:

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ দেওয়ায় বাদীর বসত-ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

৩১ জানুয়ারি শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ইকরকান্দি এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।

এ ঘটনায় রুজিনা আক্তার নামে এক নারী চার জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ইকরকান্দি এলাকার জব্বার মাদবরের ছেলে মাসুদ মাদবর (৩৬), নিজাম মাদবরের ছেলে রুমান মাদবর(৩৫, জাহাঙ্গীর মাদবরের ছেলে শাহিন মাদবর(৩৭) ও হাসেম বেপারীর ছেলে আলি আজম বেপারী(৪৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিজাম মাদবর ও আবু কালাম মাদবরের সাথে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এ নিয়ে গত (৩০ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলে দু-পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

এসময় প্রতিপক্ষ নিজাম মাদবরের লোকজন ককটেল ফাটিয়ে ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। হামলায় রুজিনা আক্তার, বিনা আক্তার ও সাথী আক্তার আহত হন।

এছাড়াও তাদের বাসা থেকে নগট টাকা, স্বর্ণ অলংকার ও ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করা হয়।

পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আহত রুজিনা আক্তার বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আসামি করে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাতে মামলার বাদী রুজিনা আক্তারের বসত-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন বাদী রুজিনা।

এ বিষয়ে রুজিনা আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আমাদের জমি জোরপূর্বক নিজাম মাদবর ও তার লোকজন নিয়ে দখল করতে আসে। এসময় তারা ককটেল ফাটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমাকে ও আমার দুই ননদকে পিটিয়ে আহত করে টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। এবং আমাদের মেরে ফেলার হুমকি-ধামকি দেয়। পরে আমি বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করি। অভিযোগ করার কারণে গতকাল রাতে তিনটার দিকে আমাদের বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমাদের ঘরে থাকা সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি এই হামলা ও ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের বাড়ীতে গেলে তাদের পাওয়া যায় নি। মুঠো ফোনে কথা হয় অভিযুক্ত রুমান মাদবরের সাথে তিনি বলেন, ওরা আমার বাবা নিজাম মাদবরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে নিয়ে আমি বর্তমানে হাসপাতালে আছি। আমরা তাদের মারধর করি নি। আগুন দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা বানোয়াট। আমরা এর সাথে জড়িত নই।

এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ হাসান সেলিম বলেন, মারামারির ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments

About T. M. Golam Mostafa

Check Also

শরীয়তপুরে বিকল্প ব্যবস্থা না করে সেতু নির্মাণ, নৌযান চলাচল বন্ধ

আজকের শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের নাড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার লঞ্চঘাট এলাকায় জয়ন্তী নদীতে লোহার খুঁটি দিয়ে আটকিয়ে …

কপি না করার জন্য ধন্যবাদ।