‘আলোকিত মানুষ চাই’ এই শ্লোগান নিয়ে শরীয়তপুরে কাজ শুরু করেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় সারাদেশব্যাপী এই প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় শরীয়তপুরেও এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্প চালু হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ হলেও হাতের নাগালের মধ্যে লাইব্রেরির সংখ্যা খুবই কম। অথচ মানব চিত্তের বিকাশের জন্য বই খুবই জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৯ সালে ঢাকা মহানগরীতে এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্প চালু করা হয়। বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ৫ লক্ষাধিক বইসহ ৭৬টি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কাজ করছে। দেশের ৪৫০ উপজেলার ৩০০০ এলাকা/ স্পটে সরাসরি তিন লক্ষাধিক এবং পরোক্ষভাবে আরও ছয় লক্ষাধিক পাঠকের মধ্যে বই দেওয়া নেওয়া করছে এই লাইব্রেরি।
শরীয়তপুরে ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে পাঠকের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এই লাইব্রেরি। সপ্তাহে ৪০টি স্পটে এই লাইব্রেরি যাতায়াত করছে। এই স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এই স্পটগুলোতে আধাঘন্টা থেকে একঘন্টা অবস্থান করে পাঠক/ সদস্যদের মধ্যে বই দেওয়া-নেওয়া করছে এই লাইব্রেরি।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে রয়েছে জনপ্রিয় উপন্যাস, গল্প, রম্য রচনা, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা, প্রবন্ধ, জীবনীগ্রন্থ, বিজ্ঞান ইতিহাস, ইত্যাদি বিষয়ের উপর যাবতীয় বই। এই লাইব্রেরির সুবিধা হল পাঠক/ সদস্যের কাছেই এই লাইব্রেরি বিপুল সংখ্যক বই নিয়ে যায়। তাই যে কেউ সদস্য হয়ে তার ইচ্ছামত স্থান থেকে এই বইগুলো সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে পড়তে পারবে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বই পড়ার অভ্যাসের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই বিভিন্ন এলাকা/ স্পটগুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে এই লাইব্রেরি। গান, আবৃত্তি, নাচ, অভিনয় ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে থাকে। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মূল্যবান বই পুরস্কার দেওয়া হয়।
লেখক: সঞ্জিত মন্ডল, লাইব্রেরী কর্মকর্তা, বিশ্বসাহিত্য ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি কার্যক্রম, শরীয়তপুর জেলা।
Facebook Comments