ডামুড্যা উপজেলায় ৮০ বছর নৌকায় জীবন পার, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে পেলেন জমিসহ পাকা ঘর

আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদক:
শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পেয়ে ৯৫ বছর বয়সী গোলাপি বেগম বলেন, আমি জীবনে কল্পনা করিনি আমাদের পায়ের তলায় মাটি হবে, আমাদেরও পাকা ঘর হবে। আমার সারাজীবন কেটেছে নৌকায়। এখন আমাকে পাকা ঘর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ৩০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে আমার জীবন অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। আজ শেখ হাসিনা আমাকে পাকা ঘর ও জমি দিয়ে আমার জীবনে আলো দিয়েছেন। এটি আমার ছেলের জীবনও বদলে দিয়েছে। আমাদের আর নৌকায় থাকতে হচ্ছে না। উল্লেখ্য, কথাগুলো বলতে গিয়ে কন্ঠ জড়িয়ে আসছিলো ৯৫ বছর বয়সী গোলাপি বেগমের।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার দারুল আমান ইউনিয়নের কাইলারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর ও জমি পেয়েছেন ভূমিহীন ও গৃহহীন সহায় সম্বলহীন নৌকা নিবাসী গোলাপি বেগম।
গোলাপি বেগমের সারাজীবন কেটেছে মেঘনা নদীর শাখা জয়ন্তী নদীর উপর ভাসমান একটি নৌকায়। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করতেন তিনি। গোলাপি বেগমের একমাত্র ছেলে সন্তানের বয়স যখন ৭ বছর তখন তার স্বামী মারা যান। এরপর থেকে অবররণনীয় কষ্টের মধ্যে ছেলেকে বড় করেছেন। নিজে নদীতে মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে কোনোমতে চলতেন। দিন এনে দিন খেয়েছেন। টাকার অভাবে ছেলেকে স্কুলে দিতে পারেননি। ছেলেটি বড় হয়ে সংসার জীবন শুরু করলেও তাতে সুখের মুখ দেখেনি। ভাগ্যহারা গোলাপি বেগমের মতই তার ছেলেকে ছেড়ে চলে গেছেন তার স্ত্রী ও তিন সন্তান। এখন শুধু ছেলেকে নিয়ে গোলাপি বেগমের দুঃখের সংসার। অতিবৃদ্ধ গোলাপি এখন তেমন একটা চলাফেরা করতে পারেন না। ছেলে নদীতে মাছ ধরে যা রোজগার করে তা দিয়েই তাদের সংসার চলে। তিনি কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি যে তার পায়ের তলায় মাটি হবে। তার ভাষ্যমতে সেই আশা পূরণ করেছেন শেখের বেটি। তিনি বলেন, আল্লাহর পরে শেখের বেটি। তিনি আমাকে ঘর দিয়েছেন, সঙ্গে দিয়েছেন জমি। তার প্রতি কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দুহাত তুলে দোয়া করি। তাকে যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন।
অসহায় ও অনিরাপদ পরিবারগুলোকে আশ্রয়ণ প্রকল্প দিয়েছে একটি দিন বদলের সনদ। ঝড়-বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় যখন আত্মমর্যাদা হারাতে বসেছিল; তখন এ প্রকল্প তাদের স্বপ্ন দেখায় উন্নত জীবনের। উন্নয়নের মূলস্রোতে ফিরে মানসম্মত জীবন-যাপনের মাধ্যমে আত্মমর্যাদাশীল নাগরিকে পরিণত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তারা। এই উদ্যোগ যেমন মানবিক তেমনি সংবিধানের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ।

Facebook Comments

About T. M. Golam Mostafa

Check Also

বিশ্বমানের শিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে দেশ সেবায় ভূমিকা রাখতে হবে: সাবেক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী শামীম

আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদক:   শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও  একেএম …

কপি না করার জন্য ধন্যবাদ।