তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কী সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব ?
আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচন এলেই নানান কথা সামনে আসে। ২০২৪ এর জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যে কাাজটি সামনে এসেছে তা হলো তত্বাবধায়ক সরকার। যা পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। দেশে দেশে নির্বাচিত সরকারের সহযোগীতায় নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমাদের এ পদ্ধতিতে বিশেষ একটা প্রেক্ষাপট এসেছিল। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সনের নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের সহযোগীতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ ৩টি নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। পরাজিতরা ঐ নির্বাচন গ্রহণ করেন নাই। যেমন করেন নাই দলীয় সরকারের সহযোগীতায় অনুষ্ঠিত নির্বাচন গুলো। এর পরেও এক সময় প্রায় সকল দলই একে একে গ্রহণ ও ধারণ করেিেছলেন। সকলের ইচ্ছায় এটা সংবিধানেও লিপিবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় যে, যারা আজকে এ পদ্ধতি নিয়ে সোচ্চার তারাই এর সর্বনাশকারী।
জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার ২০০১ সনে তত্বাবধায়ক সরকারের সহযোগীতায় অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে প্রথম আঘাত করেন। তারা তাদের পছন্দমত ব্যক্তি সাবেক বিচারপতি কে.এম হাসানকে পরবর্তী তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বানিয়ে তার মাধ্যমে ভোট কারচুপি করে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে বিচারপতি বয়ষ বৃদ্ধি করে তত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্ট নষ্ট করেন। এখান থেকেই ক্রমান্বয়ে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয় এবং এর ধারাবাহিকতায় নানা ঘটনার ও দূর্ঘটনার মধ্যে ১/১১ ভুতুড়ে সরকার জাতির ঘাড়ে চেপে বসে। সে সময়ে সে ভয়ংকর স্মৃতি আশা করি জাতি ভুলবে না। এ দুরাবস্থার জন্য দায়ী জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার। তারা তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন না করলে দেশে ১/১১ আসত না।
১/১১ এর পর ঘটনাক্রম তত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে এ অভিনব পদ্ধতি বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখজনক জামায়াত-বিএনপি এ অভিনব পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার জন্য দেশে অরাজগতার সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে।
এখন কথা হলো এ পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে তা হলে তাতে যদি বিএনপি-জামায়াত হেরে যায় তাহলে তারা কি তা গ্রহণ করবে ? তাদের অতীত ইতিহাস তা বলেনা। তা তাদের দাবি না আসলে অন্যকিছু। এ পদ্ধতিতে পূর্ণবহাল করে তারা চোরা পথে ক্ষমতায় আসার খোয়াব দেখছেনা। যা বাংলার মাটিতে কোনদিনই সম্ভব নয়। দলীয় সরকারের সহযোগীতায় নির্বাচন কমিশনের অধীনে ও ব্যবস্থাপনায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
মনে রাখতে হবে, সরকার নির্বাচনের দায়িত্বে নয়। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দায়িত্বে। নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনের যথাযথ কতৃপক্ষ। তত্বাবধায়ক বা দলীয় কোন সরকারই নির্বাচন কর্তৃপক্ষ নয়। জামায়াত-বিএনপিকে এটা অনুধাবন করতে হবে। এর বিকল্প ভাবলে তারা বাংলার মাটি থেকে হারিয়ে যাবে।
Facebook Comments