আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদকঃ
ইতিহাসের মহানায়ক বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে বাঙালি জাতি দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। বিশ্ব-মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের।
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলেও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনও পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৯৭২ সালের এদিন অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি বেলা ১টা ৪১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি যখন তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে, তখন অগণিত জনতা মুহুর্মুহু হর্ষধ্বনি ও গগনবিদারী ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাগত জানান প্রিয় নেতাকে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়। এদিন পূর্ণতা পায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বাধীনতা; জাতি গ্রহণ করে বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ।
বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে যান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান)। সেখানে লাখো মানুষের উদ্দেশে দেওয়া তাঁর ধ্রুপদী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলার মানুষ আজ স্বাধীন।’ বঙ্গবন্ধু তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে।
শরীয়তপুরে প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০ জানুয়ারী সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
Facebook Comments