উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছেন -উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম

আজকের শরীযতপুর ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ দ্রুততার সঙ্গে চলছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। তিনি বলেছেন, স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বাঁধ সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওই অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য গৃহীত মেগা প্রকল্পসমূহ দ্রুত একনেকে পাস করার বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

৩০ মে রবিবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে পানি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ সব তথ্য জানান। এর আগে তিনি পানি ভবনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উপকূলের পরিস্থিতি তুলে ধরেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এ কে এম ওয়াহেদ উদ্দিন চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফজলুর রশীদ ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন সরকার প্রমূখ। এর আগে উপমন্ত্রীর কাছে নাগরিক সমাজের সুপারিশ তুলে ধরেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।

উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ প্রধানমন্ত্রী নিজেই মনিটরিং করছেন বলে জানান উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। তিনি বলেন, ঝড়ের দিন রাতেই প্রধানমন্ত্রী খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদনের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহেই একনেকের বৈঠকে তিনটি মেগা প্রকল্প পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উপমন্ত্রী আরো বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের চাহিদার প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ সংস্কারের জন্য বস্তা, বাঁশ, টিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা মাঠে থেকে কাজের তদারকি করছেন। পানি সচিব নিজেই ওই এলাকায় আছেন। ২/৪ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করে জোয়ারের পানি আটকানো সম্ভব হবে। এছাড়া বেড়িবাঁধ সংস্কারের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ সময় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, দীর্ঘ দিন অবহেলার কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানেই কোন ভাবেই জোয়ারের পানির চাপ সহ্য করতে পারছে না। এজন্য সরকার টেকসই বাঁধ নির্মাণের মেগা প্রকল্প নিয়েছে। সেই কাজ শুরু হওয়ার আগে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহ জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। উপমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয় জনগণও স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে বাঁধ সংস্কারে অংশ নিচ্ছে। সংস্কার কাজের অগ্রগতি দেখতে উপমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে ওই এলাকায় যাবেন বলে তিনি জানান।

এদিকে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, সুন্দরবনের তীরবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণকে সহায়তার জন্য খুলনা জেলার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার জন্য অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু’র চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে ইউনিয়ন প্রতি তিন লাখ টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহের উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের ওই সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানা যায়।

Facebook Comments

About T. M. Golam Mostafa

Check Also

“জন্ম সনদ শিশুর অধিকার, বাস্তবায়নের দায়িত্ব সবার” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে শরীয়তপুরের ডামুড্যায় জন্মনিবন্ধন উৎসব পালিত

আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদক: “জন্ম সনদ শিশুর অধিকার, বাস্তবায়নের দায়িত্ব সবার” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে …

কপি না করার জন্য ধন্যবাদ।