শোষনমুক্ত বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়ে তুলতে ইমাম হুসাইন (আ:) এর আদর্শ অনুসরন অপরিহার্য- সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী

টি.এম গোলাম মোস্তফা :
সুনামগঞ্জ জেলা সদর থানার নুরুললাবাজার খানকা এ রহমানীয়া মইনীয়া মাইজভানডারীয়া উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিলে প্রধান মেহমান ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান, রাহনুমায়ে শরীয়ত ওয়াত তরীকত, পার্লামেন্ট অব ওয়ার্ল্ড সূফিজ’র প্রেসিডেন্ট সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী।

১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সফর ও মইনীয়া সাইফিয়া সুননীয়া মাদ্রাসা ও হেফজখানা এতিমখানার বাষিক সভা দোয়া মাহ্ফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইয়্যেদুশ শুহাদা ইমাম হোসাইন (আঃ) এর মাহাত্ম্য সম্পর্কে আলোচনা করেন হযরত শাহ্সূফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী (মাদ্দাজিল্লুহুল আলি)।
এসময় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযাদ্ধা মাকসুদ আলী, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির মিয়া, খলিফা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান, চেয়ারম্যান মুক্তিযাদ্ধা মাকসুদ আলী, মোহাম্মদ আবু হানিফ, মইনীয়া যুব ফোরাম, সুনামগঞ্জ জেলার আহবায়ক আনোয়ার হোসেন খন্দকারসহ বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ, আঞ্জুমান-এ-রাহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নবীকরিম ﷺ এর ৩১তম বংশধর, হযরত সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী (মাঃজিঃআঃ) বলেছেন, আজ মহান ৩রা সাবান ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ প্রিয় নবিজী ﷺ এর দৌহিত্র, প্রাণস্পন্দন হযরত সাইয়্যেদুনা ইমাম হোসাইন (আঃ), শেরে খোদা মওলা আলি (আঃ) ও খাতুনে জান্নাত হযরত মা ফাতিমা (আঃ) এর ঘর আলো করে পৃথিবীতে শুভাগমন করেন। ইমাম হোসাইন (আঃ) একজন অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। প্রিয় নবিজী ﷺ বলেছেন, “আমি হোসাইন হইতে আর হোসাইন আমার হইতে।” হযরত ইমাম হাসান ও হোসাইন (আঃ) কে তিনি বেহেশতের ফুল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তারা দুজন বেহেশতের যুবকদের নেতা। তাদের কাজে-কর্মে, চারিত্রিক মাধুর্যে প্রিয় নবিজী ﷺ এর পূর্ণাঙ্গ প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠতো।
শুধুমাত্র আহলে বায়াত-এ-রাসুল ﷺ হিসেবেই নয়, ইমাম হোসাইন (আঃ) ইসলামের জন্য তার মহৎ আত্নত্যাগের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। ৬১ হিজরীতে, শুধুমাত্র ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি নিজেকে ও তার পরিবারকে উৎসর্গ করেছেন। খোদার প্রতি তার আস্থা ছিল অটল-অবিচল। তাই দুধের শিশুর মৃত্যুযন্ত্রণা, আপন পরিবারের শাহাদাতের করুণ দৃশ্য, আর্তনাদও তাকে তার অবস্থান থেকে সরাতে পারে নি। ধৈর্যের সাথে তিনি মহান আল্লাহর প্রেরিত দ্বীনকে হেফাজতের জন্য কারবালা প্রান্তরে রক্ত ঝরিয়েছেন।

 

সে দিন তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে, পাপিষ্ঠ ইয়াজিদকে স্বীকৃতি দিলে রক্তাক্ত কারবালার ইতিহাস রচিত হত না বটে, কিন্তু ইসলাম চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। ঈমানের প্রকৃত অর্থকে তিনি তুলে ধরেছেন। ইসলামের স্বকীয়তা রক্ষা করেছেন। উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য মু’মিন ও মুনাফিক চেনার মাপকাঠি স্থাপন করেছেন।
এজন্যই হযরত খাজা মইনুদ্দীন চিশতী (রাঃ) বলেছেন,
“প্রকৃত বাদশাহ্ ইমাম হোসাইন (আঃ), দ্বীন ইসলাম ইমাম হোসাইন (আঃ)। দ্বীন ও সত্যের রক্ষক ইমাম হোসাইন (আঃ)।”
অন্যায়ের বিরুদ্ধে কিভাবে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করতে হয়, ইমাম হোসাইন (আঃ) সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে সে উদাহরণ রেখে গেছেন। শুধু মুসলিম নয়, সত্য পথের পথিকদের জন্য তিনি চিরন্তন প্রেরণা।
হযরত সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী আরো বলেন, শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়ে তুলতে ইমাম হোসাইন (আঃ) এর আদর্শ অনুসরণ অপরিহার্য।
বর্তমানে একজন ইমাম হোসাইন (আঃ) থাকলে ফিলিস্তিন, ইরাক, সিরিয়া, মায়ানমার, চীনসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে অসহায়রা নির্যাতন-জুলুমের স্বীকার হত না। তাই আমরা যারা নিজেদেরকে ইমাম হোসাইন (আঃ) এর অনুসারী হিসেবে দাবি করছি, আমাদের দায়িত্ব হল তার আদর্শে সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা। মজলুমের পাশে দাঁড়ানো, অত্যাচারীদেরকে প্রতিহত করা।
বিশেষত যুবকদের মাঝে ইমাম হোসাইন (আঃ) এর চেতনাকে জাগ্রত করতে পারলে, তারা কখনো বিপথগামী হবে না। এজন্য যুবসমাজের মাঝে ইমাম হোসাইন (আঃ) এর জীবন ও দর্শন তুলে ধরতে হবে।

বায়াতগণই হচ্ছেন প্রিয় নবিজীর ﷺ আদর্শের সর্বোত্তম ধারক ও বাহক। তাই ইসলাম বিদ্বেষী সেই নরাধম ইয়াজিদের দোসররা নানা ষড়যন্ত্রে যুব সমাজকে আহলে বায়াতে রাসুল ﷺ এর ভালোবাসা থেকে দূরে রাখতে বদ্ধপরিকর। তাই এদেশের মাটিতে সম্মানিত আহলে বায়াতগণের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে, আমাদেরকে অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

 

Facebook Comments

About T. M. Golam Mostafa

Check Also

এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এবছরও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশন স্কুল এন্ড কলেজ

আজকের শরীয়তপুর প্রতিবেদক: এস এস সি পরীক্ষার ফলাফলে বরাবরের ন্যায় এবছরও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে শরীয়তপুরের …

কপি না করার জন্য ধন্যবাদ।