শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ// নড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদে ভোজেশ্বরে অবস্থিত শহীদ ইয়ার উদ্দিন বয়াতী এতিমখানার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোঃ মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৬০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, তিনি এতিমখানার সভাপতির স্বাক্ষর নকল করে বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ভোজেশ্বর জপসা চাহেদ আলী হাফেজিয়া মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এদিকে নড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বলছেন, ভোজেশ্বরে অবস্থিত শহীদ ইয়ার উদ্দিন বয়াতী এতিমখানার নিবন্ধন বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে প্রধান শিক্ষক মোঃ মোক্তার হোসেন অবৈধভাবে এতিমদের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন, তা এতো বছরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে কেন আসলো না এবং তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো না, এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদেই প্রধান শিক্ষক হাফেজ মোঃ মোক্তার হোসেন এতিমদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করে শূন্য থেকে কোটিপতি বনে গেছে, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ এমনটাই ধারণা করছেন।
নড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সাল থেকে শহীদ ইয়ার উদ্দিন বয়াতী এতিমখানায় ৬৭ জন এতিম দেখিয়ে হাফেজ মোঃ মোক্তার হোসেন প্রতি বছরে ১৬ লক্ষ ৮ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন। এই ভাবে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৬০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ ইয়ার উদ্দিন বয়াতী এতিমখানার ৬৭ জন এতিম নেই। সেখানে রয়েছে ৮-১০ জন এতিম। কোন কালেই সেখানে ৬৭ জন এতিম ছিলো না। দীর্ঘদিন যাবৎ ৮ থেকে ১০ জন এতিম দিয়ে চলছে এ এতিমখানা। কিন্তু এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন নড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে ৬৭ জন এতিদের নামে প্রতি বছর ১৬ লক্ষ ৮ হাজার করে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার কতিপয় শিক্ষক এবং স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে আরও জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন একজন চতুর মানুষ। সমাজসেবা অফিস থেকে যখনই কোন তদন্ত আসে, তখন সে বাহির থেকে কিছু ছাত্র এনে এতিম সাজিয়ে তদন্ত কমিটিকে দেখান। তদন্ত কমিটি ঐ সকল এতিমদের কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে চলে আসেন। বাস্তবিক অর্থে তারা এই এতিমখানার ছাত্র কি না তা জানতে চান না। প্রকৃত অর্থে এই এতিমখানায় ৮ জনের বেশী এতিম নেই।
এ ব্যাপারে শহীদ ইয়ার উদ্দিন বয়াতী এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে বক্তব্য চাইলে তিনি বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

Facebook Comments